শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন

করপোরেট করহারে পরিবর্তন আসছে

করপোরেট করহারে পরিবর্তন আসছে

স্বদেশ ডেস্ক:

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে করপোরেট করহারে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিতে গতি ফেরানো, ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব বিবেচনা, নতুন কর্মসংস্থান এবং স্থানীয় শিল্পে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে এ সুযোগ দেওয়া হতে পারে বলে বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে। করপোরেট কর কমানো হলে বেসরকারি খাত উৎসাহিত হবে। এতে বিনিয়োগ বাড়বে, কর্মসংস্থান তৈরি হবে; যা অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।

চলতি অর্থবছরে ‘মুজিববর্ষের উপহার’ হিসেবে পুঁজিবাজারে তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির কর ছয় বছর পর কমানো হয়। সেই ধারা আগামী অর্থবছরেও অব্যাহত রাখা হচ্ছে। তবে ঢালাওভাবে সব খাতে নয়, আগের মতো উৎপাদনশীল খাতের সঙ্গে জড়িত পুঁজিবাজারে তালিকাবহির্ভূত শিল্পের কর কমানো হচ্ছে। কোম্পানির করপোরেট কর সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হচ্ছে।

বৈশি^ক মহামারীকালে স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী শিল্পকে সুরক্ষার মাধ্যমেই কেবল অর্থনীতির ভিত মজবুত রাখা সম্ভব। কারণ শিল্প টিকে থাকলে উৎপাদন হবে, রপ্তানি বাড়বে। এর মধ্য দিয়ে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। মানুষের আয় বাড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজস্ব আদায়ও বাড়বে। বিদ্যমান কর কাঠামো অনুযায়ী করপোরেট করের আটটি স্তর আছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ২৫, তালিকাবহির্ভূত কোম্পানিকে ৩২ দশমিক ৫, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও ২০১৩ সালে

অনুমোদন পাওয়া নতুন ব্যাংককে ৩৭ দশমিক ৫, তালিকাবহির্ভূত ব্যাংককে ৪০, মার্চেন্ট ব্যাংককে ৩৭ দশমিক ৫০, সিগারেট, জর্দা ও গুলসহ তামাকজাত দ্রব্য প্রস্তুতকারী কোম্পানিকে ৪৫, তালিকাভুক্ত মোবাইল কোম্পানিকে ৪০ ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানিকে ৪৫ শতাংশ এবং লভ্যাংশ আয়ের ওপর ২০ শতাংশ করপোরেট কর দিতে হয়। এর বাইরে তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানকে ১০ ও ১২ শতাংশ এবং সমবায় প্রতিষ্ঠানকে ১৫ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স দিতে হয়।

রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী আমাদের সময়কে বলেন, এটি দেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হয়ে থাকবে। ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে। করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের টিকে থাকতে এই সহায়তা দরকার ছিল। ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও রিলিফ পাবেন। শিল্পায়নে উৎসাহিত হবেন।

অন্যদিকে আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩(এফ) ধারা অনুযায়ী, ব্যাংকে রক্ষিত আমানতের বিপরীতে প্রাপ্ত সুদ বা মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ উৎসে কর আদায় করা হয়। তবে আমানতকারীর ১২ সংখ্যার ই-টিআইএন থাকলে ১০ শতাংশ উৎসে আয়কর কাটা হয়। যেহেতু স্কুল ব্যাংকিং হিসাবধারীরা অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং তাদের কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র ও ই-টিআইএন সার্টিফিকেট নেই, এ কারণে হিসাব থেকে ১৫ শতাংশ উৎসে আয়কর আদায় করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে আয়করের ধারাটি সংশোধন করে স্কুল ব্যাংকিং হিসাবে উৎসে কর ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এনবিআরকে চিঠি দিয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এনবিআরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ১৮ বছরের কম বয়সী একজন শিক্ষার্থী তার জন্মনিবন্ধন সনদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র বা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়নপত্র এবং সর্বশেষ মাসের বেতন রসিদের সত্যায়িত অনুলিপির মাধ্যমে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খুলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর পক্ষে পিতা-মাতা বা আইনগত অভিভাবকের মাধ্যমে হিসাবটি পরিচালনা করতে হয়।

সাধারণত পিতা-মাতা বা আইনগত অভিভাবক থেকে পাওয়া টাকা, বৃত্তি বা উপবৃত্তির টাকা এ ধরনের হিসাবে জমা হয় এবং হিসাবের মূল সুবিধাভোগীও হিসাবধারীর পিতা-মাতা বা আইনগত অভিভাবক। এ ছাড়া হিসাবধারী অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ১২ অঙ্কের ই-টিআইএন থাকে না। এ কারণে ব্যাংকগুলো আমানতের সুদ বা মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সুদ আয়ের ওপর আয়করের পরিবর্তন আনা দরকার। তা না হলে স্কুলশিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা স্কুল ব্যাংকিং হিসাবে অর্থ জমা না করে নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে জমা করতে উৎসাহিত হবেন। যদি তা-ই হয়, তবে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব কার্যক্রমটি বাধাগ্রস্ত এবং ছাত্রছাত্রীদের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ার উদ্দেশ্যও ব্যাহত হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877